গুগল ম্যাপস নিঃসন্দেহে সেরা ম্যাপ অ্যাপ। কিন্তু এর অসংখ্য ফিচারের খুব সামান্যটাই বেশির ভাগ মানুষ ব্যবহার করেন। অথচ এগুলোই আপনার জীবনকে অনেক সহজ করে তুলতে পারে।
গুগল ম্যাপস শুধু রাস্তা দেখায় না, চলাচলের পুরো যাত্রা সহজ করে দেয়। পথের জ্যাম, পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সময়সূচি, রিয়েল-টাইম ট্রাফিক আপডেট—সবই হাতের মুঠোয়। এখানেই শেষ নয়, কাছাকাছি রেস্তোরাঁ, দোকান বা সেবা খুঁজেও পেতে পারেন এক ক্লিকে। গুগল ম্যাপসে রয়েছে বেশ কিছু ফিচার, যেগুলো জীবনকে সত্যিই অনেক সহজ করে তোলে। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু দারুণ ফিচার।
‘নিকটবর্তী’ ফিচার
গুগল ম্যাপস ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু খোঁজার পাশাপাশি অ্যাপটি ব্যবহার করে কোনো এলাকার আশেপাশের প্রয়োজনীয় জিনিসও খুঁজে পেতে পারেন। এর জন্য নিয়ারবাই বা নিকটবর্তী ফিচারটি সবচেয়ে ভালো উপায়। এ ফিচারটি ব্যবহার করার সময় আপনি কোনো ঠিকানা, পাড়া, শহর বা টাউন সার্চ করতে পারেন। এরপর আপনার অপশনগুলোর মধ্যে একটি নিয়ারবাই নামের অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করার পর আপনি নির্বাচন করতে পারবেন কী খুঁজতে চান—হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নাকি অন্য কিছু। এরপর অ্যাপটি আপনার জন্য যা খুঁজছেন তা খুঁজে বের করবে।
গুগল ম্যাপস একাধিক ডিভাইসে ব্যবহার করা যায়। যেখানে অ্যাপল ম্যাপস শুধু অ্যাপল ডিভাইসেই পাওয়া যায়, সেখানে গুগল ম্যাপস সব অপারেটিং সিস্টেমে পাওয়া যায়। কম্পিউটারে ব্রাউজিং করার সময় খুব সহজেই পরামর্শ বা নির্দেশনা আপনার ফোনে পাঠানো সম্ভব।
বাম সাইডবারে একটি ফোন ও তীর আইকন দেখতে পাবেন। এটিতে ট্যাপ করলে আপনি নির্বাচন করতে পারবেন কিভাবে নির্দেশনা বা পরামর্শটি আপনার ফোনে পাঠাতে চান।
ডেস্কটপে এই ফিচার ব্যবহার করার পাশাপাশি, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থেকেও গুগল ম্যাপসের তথ্য অন্য মোবাইল ডিভাইসে পাঠাতে পারেন।
হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য ইন্সট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপে অবস্থান বা লোকেশন শেয়ারিং একটি কার্যকর উপায়, যার মাধ্যমে বন্ধু ও পরিবারের কাছে আপনার অবস্থান দেখাতে পারেন। এটি শুধু নিরাপত্তার জন্যই নয়, যদি আপনি কারো সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করে থাকেন এবং তারা সহজে আপনাকে খুঁজে পেতে চায়, তাতেও এটি খুবই উপযোগী।
তেমনি গুগল ম্যাপসেও একটি ফিচার রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার অবস্থান শেয়ার করতে পারেন। ফিচারটি চালু করা খুবই সহজ। প্রথমে আপনার প্রোফাইল আইকন নির্বাচন করুন। এরপর লোকেশন শেয়ারিংয়ে ট্যাপ করুন। পরে শেয়ার লোকেশন নির্বাচন করুন এবং ঠিক করুন কার সঙ্গে আপনি আপনার অবস্থান শেয়ার করবেন।
আপনি কত সময়ের জন্য আপনার অবস্থান শেয়ার করতে চান তা কাস্টমাইজ করতে পারেন। যাদের সঙ্গে আপনি এই অনুমতি শেয়ার করবেন, তারা আপনার ডিভাইসের ব্যাটারির শতাংশও দেখতে পারবে।
যে ঠিকানাগুলো আপনি প্রায়ই ভ্রমণ করেন তা বারবার ম্যানুয়ালি টাইপ করা বিরক্ত লাগে। কিন্তু গুগল ম্যাপসে একটি অপশন রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার বাসা এবং কর্মস্থলের ঠিকানা সংরক্ষণ করতে পারেন। একবার এটি করার পর, আপনি কেবল একটি ট্যাপেই বর্তমান অবস্থান থেকে নির্দেশনা পেতে পারবেন।
এজন্য সেটিংসে গিয়ে অ্যাকাউন্ট সেটিংসে যান। সেখানে এডিট হোম অর ওয়ার্ক নির্বাচন করুন। এরপর যেটি সম্পাদনা করতে চান, তা নির্বাচন করুন। আপনি মানচিত্র থেকে নির্বাচন করতে পারেন বা ঠিকানাটি ম্যানুয়ালি প্রবেশ করাতে পারেন।
গুগল ম্যাপসের সবচেয়ে সহজ ফিচারগুলোর একটি হলো জায়গা সংরক্ষণ করা, যদিও এটি অনেকেই উপেক্ষা করে যান। এই ফিচার ব্যবহার করে আপনি ভবিষ্যতে যেসব জায়গায় যেতে চান, সেগুলো চিহ্নিত করতে পারেন। এর পাশাপাশি, এরইমধ্যে যেসব জায়গায় গেছেন, সেগুলোও সংরক্ষণ করা সম্ভব। পরে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। এ ছাড়া যদি কোনো জায়গায় গিয়ে সত্যিই ভালো লাগে এবং ভবিষ্যতে আবার যেতে চান, তখনও এই ফিচার খুব কাজে আসে।
গুগল ম্যাপসে কোনো জায়গাকে পছন্দের হিসেবে সংরক্ষণ করতে প্রথমেই অবস্থানটিতে ক্লিক করুন। এরপর সেভ চাপুন। যেই তালিকায় সংরক্ষণ করতে চান, তা নির্বাচন করুন।
যদি আপনার কাছে কোনো উপযুক্ত তালিকা না থাকে, তবে নতুন একটি তালিকা তৈরি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, গাড়ি রাখার জায়গা সংরক্ষণ করতে চাইলে পার্কিং নির্বাচন করুন এবং সংরক্ষণ করতে কোনো জায়গা বেছে নিন।